রাজধানী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাম উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
রোববার ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ নির্দেশ দেন। দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মাহবুব রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন।
আতিকুর রহমান খানের মালিকানাধীন ন্যাশনাল ফ্রায়েড চিকেনের নামে সাউথইস্ট ব্যাংকে ২০১৫ সালে একটি হিসাব খোলা হয়। ওই হিসাবে প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু সরেজমিন আফতাবনগরে সেই প্রতিষ্ঠানের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দুদুক গত ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আতিকুর রহমান খান ২০০৪ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এমপিওভুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কোনো পদ নেই। অবৈধভাবে এ পদ সৃষ্টি করে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
আতিকুর রহমানের ১৫টি ব্যাংকে ৯৭টি অ্যকাউন্ট আছে। এসব অ্যাকাউন্টে ২০০৭ সাল থেকে চলতি বছরের ২৮ মার্চ পর্যন্ত ১১০ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৯২ টাকা লেনদেন হয়েছে।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অবৈধ ভর্তিসহ সব বাণিজ্যের হোতা এই আতিকুর রহমান। তিনটি ক্যাম্পাসের প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর ড্রেস (পোশাক) তৈরি, ক্যান্টিন, লাইব্রেরি সবই তার নিয়ন্ত্রণে। এমনকি স্কুলের সামনে ফুটপাতে শতাধিক দোকান বসিয়েও তিনি আয় করেন মোটা অঙ্কের টাকা।
আইডিয়াল স্কুলের যত ধরনের কেনাকাটা, উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ হয় তার সবই করেন আতিক। দরপত্রেও অংশ নেয় নামে-বেনামে তার একাধিক প্রতিষ্ঠান। সেখানে চলে বড় ধরনের লুটপাট।
গত ১২ বছরে প্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং কর্মচারী নিয়োগে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে আতিকের মাধ্যমে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগের ভিত্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।