You are here
Home > জাতীয় > অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে ‘অমর একুশে বইমেলা-২০২২’ এর উদ্বোধন করেছেন।
‘বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বই মেলা শুধু বই মেলা নয়, সকলের মিলন মেলা।’
সারাদেশে সংস্কৃতি চর্চা আরো বাড়ানোর পাশাপাশি সকলকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান ও পুণর্ব্যক্ত করেন তিনি।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে রাজধানীর বাংলা একাডেমির মেলা প্রাঙ্গনে সংযুক্ত হয়ে ভার্চুয়ালি মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
 মেলা উদ্বোধনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ প্রদান করেন। ১৫ জনকে বিশিষ্ট লেখক-কবি-সহিত্যিক এবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
এবারের অমর একুশে বইমেলা-২০২২ এর মূল প্রতিপাদ্য-‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’।
বাংলা একাডেমির সভাপতি কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। আরো বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজয়ীদের হাতে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার -২০২১’ তুলে দেন।
 ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার রীতি থাকলেও করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার কাক্সিক্ষত অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে মাসের মাঝামাঝিতে।
 সোমবার বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে বাইমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ৩৮তম এই বইমেলা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে মেলার মেয়াদ বাড়ানোর আভাস দিয়েছিলেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মেলা উদ্বোধনকালের ভাষণে সকলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষ একে জাতির পিতার জন্মদিন ১৭ মার্চ পর্যন্ত চলার ইঙ্গিত দেন।
ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর ২ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এই বইমেলা খোলা থাকবে। রাত ৮ টার পর নতুন করে কেউ মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা সকাল ১১ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলবে। এছাড়া, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮ টা থেকে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গায় বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় মোট ৩৫ টি প্যাভিলিয়নসহ একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট সহ মোট ৫৩৪ টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বইমেলায় প্রবেশ ও বাহির পথে নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেলার এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকবে। প্রবেশ ও বাহির পথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ।
বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪টি প্রবেশপথ ও ৩টি বাহির পথ জনসাধারণের প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য থাকছে। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির  ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মানপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বরাবরের মতো বাংলা একাডেমির ৩টি প্যাভেলিয়ন, শিশুকিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য ১টি এবং সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকার এর জন্য ১টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এবার শিশুচত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে রাখা হয়েছে। তবে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে প্রথমদিকে ‘শিশু প্রহর’ থাকছে না।
অন্যদিকে, লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়ে উদ্যানের এম্ফিথিয়েটারের পূর্বদিকে মেলার মূল প্রাঙ্গণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মোট ১২৭ টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটি একটি প্যাভিলিয়ন নিয়েছে। এই প্যাভেলিয়নটি ইতোমধ্যে অনন্যরূপে সাজানো হয়েছে।
বইমেলা আরো প্রাণবন্ত ও জমজমাট করতে এবং লেখকদের উৎসাহ দিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে। অমর একুশে বইমেলা-২০২২ এর প্রচার কার্যক্রমের জন্য একাডেমিতে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে ১টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২টি তথ্যকেন্দ্র রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের অবাধ তথ্য আদান-প্রদানের সুবিধার্থে বইমেলায় মিডিয়া সেন্টার রয়েছে তথ্যকেন্দ্রের উত্তরপাশে।
বর্তমান সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ধারণার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এটুআই’ কর্তৃপক্ষ বইমেলায় তাদের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, তথ্য কেন্দ্রের সর্বশেষ খবরাখবর এবং মেলার মূল মঞ্চের সেমিনার প্রচারের ব্যবস্থা করবে। এছাড়া থাকছে সার্বক্ষনিক ওয়াই-ফাই সুবিধা।
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার:
পুরস্কার বিজয়ীরা হচ্ছেন-আসাদ মান্নান, বিমল গুহ (কবিতা); ঝর্ণা রহমান, বিশ্বজিৎ চৌধুরী (কথা সাহিত্য); হোসেন উদ্দিন হোসেন (প্রবন্ধ/গবেষণা); আমিনুর রহমান, রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী (অনুবাদ); সাধনা আহমেদ (নাটক); রফিকুর রশীদ (শিশু সাহিত্য); পান্না কায়সার (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা); হারুন-উর-রশিদ (বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণা); শুভাগত চৌধুরী (সায়েন্স ফিকশন/এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স), সুফিয়া খাতুন, হায়দার আকবর খান রনো (আত্মজীবনী/ভ্রমণকাহিনী) এবং আমিনুর রহমান সুলতান (লোককাহিনী)।

Similar Articles

Leave a Reply

Top