বড় কোন চমক ছাড়াই আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য আজ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে অংশ নেয়া ক্রিকেটারদেরকেই মূলতঃ রাখা হয়েছে ১৫ সদস্যের দলে। আর স্ট্যান্ডবাই হিসেবে ঠাই পেয়েছেন ফাস্ট বোলার রুবেল হোসেন ও লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।
ওমান ও দুবাই’র কন্ডিশন বিবেচনায় ফর্ম ও স্পিন নির্ভর বাংলাদেশ দল থেকে যে রুবেল হোসেন বাদ পড়বেন সেটি প্রত্যাশিতই ছিল। আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে টি-২০ বিশ্বকাপ।
‘বি’ গ্রুপে স্বাগতিক ওমান, স্কটল্যান্ড ও পাপুয়া নিউ গিনির সঙ্গে বাছাই পর্বে খেলে সুপার ১২ এ অংশ নিতে হবে বাংলাদেশকে। সর্বশেষ ভারতে অনুষ্ঠিত ২০১৬ বিশ্বকাপে অংশ নেয়াদের মধ্য থেকে এবারের দলে স্থান পেয়েছেন ছয় ক্রিকেটার। এরা হলেন: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমান ও নুরুল হাসান শাওন।
সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের মাধ্যমে দারুন সময় কাটাচ্ছে টাইগাররা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, সিরিজ জয় বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে অনুপ্রেরনা যোগাবে। তবে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে খুবই ধীরগতির উইকেটে খেলা নিয়ে রয়েছে সমালোচনা।
আজ মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দল ঘোষনা কালে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘এই দলটির প্রতি আমাদের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। কারণ আমরা যথাক্রমে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা তিনটি সিরিজ জিতেছি। আশা করি আমরা বিশ্বকাপেও ভাল করব এবং এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘যেকোন ফর্মেটেই জয়ের ধারাবাহিকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জয়ের অভ্যাস সব সময় আপনার আত্মবিশ্বাসকে আরো বাড়িয়ে তুলবে। আর আপনি যদি নিয়মিত হারের মধ্যে থাকেন, তাহলে সেটি আপনাকে অক্ষম করে দিবে। সেই দিক থেকে উইকেট যেমনই হোকনা কেন, জয়ের অভ্যাস আপনাকে এগিয়ে দেবে এবং আমার মতে এটি আমাদেরকে বিশ্বকাপে সহায়তা করবে।’
ওমান ও দুবাইর’র কন্ডিশনে এই দলটি ভাল করবে বলে নিজের আস্থার কথা জানিয়ে মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর অন্তত এক সপ্তাহ আগে আমরা ওমান যাব। আমরা এখনো ওমানে খেলিনি, তাই সেখানকার উইকেট সম্পর্কে কোন ধারনা নেই। সুতরাং যে কোন সমীকরণের বাইরে গিয়েই এই দলটির প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’
তিনি বলেন, আমাদের প্রথম লক্ষ্য হবে প্রথম পর্বের বৈতরণী পার করা। এরপর আমরা সুপার ১২ পর্বের প্রতি মনোযোগ দেব।
ইতোমধ্যে বিশ্বকাপ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সিনিয়র ব্যাটসম্যান ওপেনার তামিম ইকবাল। তার মতে যে সব ক্রিকেটার নিয়মিতভাবে তার চেয়েও বেশী খেলছেন তাদেরই এখানে সুযোগ পাওয়া উচিৎ। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে ৭৪ টি টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তামিম। সাতটি হাফ সেঞ্চুরি ও একটি সেঞ্চুরিসহ মোট রান করেছেন ১৭৫৮। তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশের হয়ে টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন ২০২০ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
বড় এই আসরে তামিমের সার্ভিস থেকে দেশ বঞ্চিত হবে উল্লেখ করে নান্নু বলেন, ‘তামিম তিন ফর্মেটের ক্রিকেটেই বাংলাদেশ দলের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। তিনি সেচ্ছায় এই টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তার খেলার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী ছিলাম। তবে এটি ছিল অপ্রত্যাশিত। আমরা তাকে মিস করব। আমাদের বিশ্বাস আরো শক্তিশালী হয়ে তিনি ফিরবেন।’
তবে ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে লিটন দাস, সৌম্য সরকার ও নাইম শেখের বিষয়েও বেশ আশাবাদী বাংলাদেশ দলের প্রধান নির্বাচক। তিনি বলেন, ‘তারা দারুন একটি মঞ্চ পেয়েছে। বিশ্বকাপে ভাল খেলোর মত যোগ্যতা তাদের আছে। তাদের প্রতি আমাদের আস্থা আছে।’
দুবাইয়ের কন্ডিশনে লেগ স্পিনাররা সাফল্যে পাবে বলে বিবেচনা করা হলেও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডবাই হিসেবে পছন্দ করেছে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে। বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক নান্নু বলেন, ‘মূল পরিকল্পনায় বিপ্লব যথেষ্ট ফিট ছিল না। তিনি বলেন, ‘বিপ্লব দীর্ঘ দিন অসুস্থ ছিলেন। তিনি সুস্থ হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের মূল পরিকল্পনার সময় তাকে ফিট পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাকে স্ট্যান্ডবাই তালিকায় রাখা হয়েছে।’
দল: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), নাইম শেখ, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, শামিম পাটওয়ারি।
স্ট্যান্ডবাই: রুবেল হোসেন, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।