You are here
Home > খেলাধুলা > বিপিএল: উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ঢাকাকে ৩ রানে হারালো চট্টগ্রাম

বিপিএল: উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ঢাকাকে ৩ রানে হারালো চট্টগ্রাম

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) উত্তেজনাপূর্ণ ২৩তম ম্যাচে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকাকে ৩ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। 
প্রথমে ব্যাট ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান করে চট্টগ্রাম। শামিম ৩৭ বলে করেন ৫২ রান। জবাবে তামিম ইকবালের অপরাজিত ৭৩ রানের পরও ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৫ রান করে ম্যাচ হারে ঢাকা। 
এই জয়ে ৯ ম্যাচে ৪ জয় ও ৫ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থস্থানে উঠলো চট্টগ্রাম। ৮ ম্যাচে ৩ জয়, ৪ হারে ও ১টি পরিত্যক্ত ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চমস্থানে নেমে গেল ঢাকা।   
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রামের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। 
বল হাতে নিয়ে প্রথম ওভারে ৪ রান দেন ঢাকার পেসার মাশরাফি বিন মর্তুজা। পরের ওভারে ঢাকাকে উইকেট উপহার দেন আফগানিস্তানের বাঁ-হাতি পেসার ফজলহক ফারুকি।  ১ রান করা ওপেনার জাকির হাসানকে বোল্ড করেন এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা ফারুকি। 
এরপর ইংল্যান্ডের উইল জ্যাকসকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন নয়া অধিনায়ক আফিফ হোসেন। টুর্নামেন্টের শুরুতে চট্টগ্রামের অধিনায়ক ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এরপর অধিনায়ক হন নাইম ইসলাম। এবার নাইমের জায়গায় আফিফ। 
জ্যাকসকে নিয়ে উইকেট ধরে খেলতে গিয়ে পাওয়া প্লেতে দলকে ৩৯ রান এনে দেন আফিফ। অষ্টম ওভারে এই জুটি ভাঙ্গেন আরাফাত সানি। উইকেট ছেড়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন জ্যাকস। ২৪ বলে ৩টি চারে ২৬ রান করেন তিনি। আফিফের সাথে ৩৫ বলে ৪০ রান যোগ করেন জ্যাকস। 
সানির আঘাতের পরের ওভারে চট্টগ্রামের চাপ বাড়ান মাশরাফি। ম্যাশের বলে ডিপ মিড উইকেটে মোহাম্মদ নাইমকে ক্যাচ দেন মিরাজ। ২ রান করেন তিনি। 
পরের ওভারে উইকেট সেট থাকা আফিফকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। নিজের প্রথম ওভারেই সাফল্য পান দলনেতা। ২৪ বলে ৪টি চারে ২৭ রান করেন আফিফ। 
১০ম ওভারে উইকেটে গিয়ে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন উইকেটরক্ষক আকবর আলি। তবে আফগানিস্তানের স্পিনার কাইস আহমেদের বলে আউট হওয়ার আগে  ১০ বলে ৯ রান করেন আকবর। 
৮৪ রানে ৫ উইকেট পতনে চাপে পড়েন বেনি হাওয়েল ও শামিম হোসেন। আকবরের বিদায়ের পর ১৭ বল বাউন্ডারিহীন ছিলো চট্টগ্রাম। ১৭তম ওভার থেকে মারমুখী হয়ে উঠেন তারা। শেষ চার ওভারে ৫১ রান তুলেন হাওয়েল-শামিম। 
৩৪তম বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলেন শামিম। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হবার আগে ৫২ রান করেন শামিম। ৩৭ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা মেরে দলের স্কোর ১৪৮ রানে নিয়ে যান হাওয়েল। ১৯ বলে ২টি ছক্কায় ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন  হাওয়েল। 
ঢাকার ছয় বোলার- মাশরাফি,ফারুকি, সানি, এবাদত, কাইস ও মাহমুদুল্লাহ ১টি করে উইকেট নেন। 
জয়ের জন্য ১৪৯ রানের টার্গে পেয়ে জবাব দিতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে ঢাকা। ২৬ বলের ব্যবধানে ৩১ রানে ৩ উইকেট হারায় তারা। ওপেনার আফগানিস্তানের আহমেদ শাহজাদ ৭ রান করে পেসার শরিফুল ইসলামের শিকার হন। তিন নম্বরে নামা ইমরান উজ্জামানকে(৮) বিদায় করেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। 
পিঞ্চ হিটার হিসেবে চার নম্বরে নেমেছিলেন মাশরাফি। ২ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই এবারের বিপিএলের একমাত্র হ্যাটট্রিকম্যান মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির বলে বোল্ড হন ম্যাশ। পাওয়ার প্লেতে ২৮ রান তুলতে পারে ঢাকা।
শুরুটা ধাক্কাটা সামলাতে সতর্ক হয়ে পড়েন দুই সেরা ব্যাটার তামিম ইকবাল ও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। ১০ ওভার শেষে ৫৭ রান উঠে ঢাকার। এরপর রানের গতি বাড়ান তামিম-মাহমুদুল্লাহ। হাওয়েলের দুই ওভারে ২০ রান নেন তামিম-মাহমুদুল্লাহ। আর ১ ওভারে ১৩ রান তুলেন তারা। 
১৫তম ওভারের প্রথম বলে তামিম-মাহমুদুল্লাহ জুটি ভেঙ্গে চট্টগ্রামকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মিরাজ। ২৯ বলে ২৪ রান করা মাহমুদুল্লাহকে শিকার করেন মিরাজ। আউট হওয়ার আগে চতুর্থ উইকেটে তামিমের সাথে  ৫৯ বলে ৭১ রান যোগ করেন মাহমুদুল্লাহ। 
মাহমুদুল্লাহ ফেরার পরের বলেই টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৪৩তম এবং এবারের  টুর্নামেন্টে তৃতীয়  হাফ-সেঞ্চুরির পূর্ণ করেন তামিম। আসরে একটি সেঞ্চুরিও করেছেন তিনি। 
শেষ চার ওভারে ৪০ রানের প্রয়োজন পড়ে ঢাকার। শুভাগত হোমকে নিয়ে ১৭তম ওভারে ৮, ১৮তম ওভারে ১২ রান তুলেন তামিম-শুভাগত। এতে শেষ ২ ওভারে ২০ রান দরকার পড়ে ঢাকার। 
১৯তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা আসে শুভাগতর ব্যাট থেকে। শরিফুলের পরের বলে বোল্ড হন শুভাগত। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১১ বলে ২২ রান করেন শুভাগত। একই  ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি আদায় করে নেন তামিম। ফলে শেষ ওভারে ৯ রান দরকার পড়ে ঢাকার। 
শেষ ওভারের প্রথম বলে কাইসকে শিকার করেন মৃত্যুঞ্জয়। পরের দুই বলে রান দেননি মৃত্যুঞ্জয়। চতুর্থ বলটি ওয়াইডে ১ রান, পঞ্চম বলে বাইতে ১ রান ও আর শেষ বলটি নো হয়। এতে শেষ বলের ফ্রি হিটে ৫ রানের প্রয়োজনে, ১ রান নিতে পারেন নাইম।  ওভারে মৃত্যুঞ্জয় মাত্র ৫ রান দিলে ম্যাচ হেরে যায় ঢাকা। পুরো ওভারে মাত্র একবার স্ট্রাইক পান তামিম। বাকী বলগুলোতে স্ট্রাইক পেয়ে, দলকে জয়ের বন্দরে নিতে পারেননি নাইম। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৫ রান করে ঢাকা। 
৫ বলে ২ রানে অপরাজিত থাকেন নাইম। ৫৬ বলে তামিমের অপরাজিত ৭৩ রান বৃথাই যায় শেষ পর্যন্ত। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান তামিম। চট্টগ্রামের শরিফুল-মৃত্যুঞ্জয় ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন শামিম। 
সংক্ষিপ্ত স্কোর : 
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ১৪৮/৬, ২০ ওভার (শামিম ৫১, আফিফ ২৭, মাহমুদুল্লাহ ১/৫)।
মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা : ১৪৫/৬, ২০ ওভার (তামিম ৭৩*, মাহমুদুল্লাহ ২৪, মৃত্যুঞ্জয় ২/২১)।
ফল : চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৩ রানে জয়ী। 
ম্যাচ সেরা : শামিম হোসেন (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)। 

Similar Articles

Leave a Reply

Top