বছরের প্রথম পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেয়েছেন রাফায়েল নাদাল। এই হারে একইসাথে পাওয়া হয়নি ইন্ডিয়ান ওয়েলস মাস্টার্সের শিরোপাও। রোববার বিশ্বের ২০ নম্বর র্যাঙ্কধারী মার্কিন খেলোয়াড় টেইলর ফ্রিটজ ফাইনালে নাদালকে ৬-৩, ৭-৬ (৭/৫) সরাসরি সেটে পরাজিত করে শিরোপা জয় করেন। এর মাধ্যমে ২১ বারের রেকর্ড গ্র্যান্ড স্ল্যাম বিজয়ী নাদালের এ বছর টানা ২০ ম্যাচ জয়ের ধারা শেষ হলো।
এলিট মাস্টার্স টুর্নামেন্টে এটাই ২৪ বছর বয়সী ফ্রিটজের প্রথম ও ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শিরোপা। নাদাল জিতলে এটি হতো তার রেকর্ড স্পর্শকারী ৩৭তম মাস্টার্স শিরোপা।
ডান গোঁড়ালির ইনজুরির ব্যাথা নিয়েই কাল কোর্টে নেমেছিলেন ফ্রিটজ। রোববার সকালেও মনে হয়নি তিনি কোর্টে নামতে পারবেন। ম্যাচ শেষে অনেকটাই আবেগপ্রবন হয়ে পড়া ফ্রিটজ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই এমন একটি দিনের স্বপ্ন দেখেছি। ইন্ডিয়ান ওয়েলস আমার কাছে বিশেষ একটি টুর্ণামেন্ট। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই অন্তত এই একটি টুর্নামেন্টে জয়ের স্বপ্ন ছিল। আজ সেটা পূরণ হয়েছে। পুরো দিনটাই আমার জন্য একটি ঘোরের মধ্যে কেটেছে। সকালেও জানতাম না আদৌ খেলতে পারবো কিনা। একসময় মনে হয়েছিল নাম প্রত্যাহার করে ফেলি। ম্যাচের ঠিক আগ মুহূর্তে খেলার সিদ্ধান্ত নেই। আমার দলের বেশীরভাগই না খেলার পক্ষে মত দিয়েছিল। আমি তাদেরকে হতাশ করতে চাইনি। সে কারনেই কোর্টে এসে শেষ সিদ্ধান্তটি নেই। এখনো কিছুই ভাবতে পারছি না।’
এদিকে ৩৬ বছর বয়সী নাদালও ম্যাচের মধ্যেই দুইবার চিকিৎসা নিয়েছেন। দুইবার পিঠের ওপরে ও বুকে ব্যথার কারনে তার খেলতে সমস্যা হয়েছে, এমনকি শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। এ সম্পর্কে নাদাল বলেন, আমি জানি না ব্যাথাটা পাঁজর থেকে হচ্ছে কিনা। এ ব্যপারে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নই। কিন্তু ব্যাথার কারনে স্বাভাবিক ভাবে খেলতে পারিনি, অনেক কিছুই সীমিত করতে হয়েছে।
ইতোমধ্যেই নাদাল ঘোষনা দিয়েছেন আগামী সপ্তাহে মিয়ামি মাস্টার্সে তিনি খেলছেন না। ক্লে কোর্ট মৌসুমের প্রস্তুতির আগে তার কিছুদিনে বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ২০২১ সালে পায়ের ইনজুরির কারনে ক্যারিয়ারই প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল এই স্প্যানিয়ার্ডের। কিন্তু আবারো দৃঢ় মনোবল নিয়ে কোর্টে ফিরে এসে জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ারের ২১তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জয়ের মাধ্যমে রেকর্ড গড়েন। এরপর আকাপুলকো ওপেনেরও শিরোপা জয় করেছেন।
শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া নাদাল দ্বিতীয় সেটের ১০ম ম্যাচে এসে একটি ম্যাচ পয়েন্ট রক্ষা করেছেন। কিন্তু নার্ভাস টাইব্রেকারে শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছে ফ্রিটজের। এর আগে ম্যাচ শুরুর ১৯ মিনিটের মধ্যেই ফ্রিটজ প্রথম সেটে ৪-০ গেমে এগিয়ে গিয়েছিলেন। পরের দুই গেম নাদাল জয়ের পর ফ্রিটজ যখন ৫-২ গেমে এগিয়ে গিয়েছিলেন তখন নাদাল একটি ব্রেক পয়েন্ট অর্জণ করেন। কিন্তু পরের গেমেই আবারো ফ্রিটজ ফিরে এসে ৬-৩ গেমে প্রথম সেট জয় করেন।