ত্রিদেশীয় সিরিজের বাঁচা মরার লড়াইয়ে পারল না বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের ২০৯ রানের টার্গেটের বিপরীতে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে করেছে ১৬০ রান। ৪৮ রানের বড় হারে শিরোপার লড়াইয়ে ছিটকে পড়ল টাইগাররা।
তবে চাপের মুখে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান লড়াই চালিয়েছিলেন। ৩৩ বলে ফিফটি তুলে নিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের ইনিংস থামে ৭০ রানে।
লক্ষ্য ২০৯ রানের। বোল্টের প্রথম ওভারেই বল আকাশে তুলে দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বোলারসহ চার ফিল্ডার দৌড়ে এসে বলের দিকে তাকিয়ে থাকলেও ভুল বোঝাবুঝিতে কেউ হাত বাড়াননি। শূন্য রানে বেঁচে যান শান্ত।
তৃতীয় ওভারে অ্যাডাম মিলনের বলে আরেকবার জীবন পান শান্ত। এবার মিডঅনে ক্যাচ ফেলে দেন টিম সাউদি। তবে দুইবার বেঁচে গিয়েও ১২ বলে ১১ করে ফেরেন শান্ত। এক বল পরই বোল্ড হন মিলনের বলে। এরপর লিটন দারুণ কিছু শট খেলে আউট হন ব্রেসওয়েলের বলে। ১৬ বলে ৩ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ২৩ করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তবু ২ উইকেটে ৫২ রানের ভালো সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটে সৌম্য সরকার আর সাকিব আল হাসান ২৭ বলে যোগ করেন ৪৩ রান। দারুণ গতিতে ছুটছিল জুটিটি।
দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে সৌম্যও খেলছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। কিন্তু দশম ওভারের শেষ বলে মিলনের শর্ট বলের ফাঁদে পা দেন সৌম্য। থার্ডম্যানে তুলে দেন ক্যাচ। ১৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে গড়া সৌম্যর ২৩ রানের ইনিংসটি শেষ তাতেই। এরপর আফিফ হোসেন (৪ বলে ৪) ডাউন দ্য উইকেট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ব্রেসওয়েলের ঘূর্ণিতে। এর আগে টাইগার বোলারদের পিটিয়ে ৫ উইকেটে ২০৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে নিউজিল্যান্ড। জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ২০৯ রান। ক্রাইস্টচার্চে মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টস জেতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ।
ভয়ংকর চেহারায় হাজির হন ফিন অ্যালেন। ২৫ বলে তিনি ৪৫ রানের ঝোড়ো জুটি গড়েন ডেভন কনওয়ের সঙ্গে। মারমুখী ব্যাটিং করা অ্যালেনকে পঞ্চম ওভারে অবশেষে ফেরান শরিফুল ইসলাম। টাইগার পেসারকে তুলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে ইয়াসির রাব্বির দুর্দান্ত ক্যাচ হন কিউই ওপেনার (১৯ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৩২)। তবে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৫৪ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। এরপর ঝড় তোলেন কনওয়ে, ৩০ বলে ফিফটি তুলে নেন কিউই ওপেনার। মার্টিন গাপটিলের সঙ্গে ৫৪ বলে ৮২ রানের আরেকটি জুটি গড়েন তিনি।
গাপটিল ঠিক হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না। ১৪তম ওভারে এবাদত হোসেনের ফুলটস বলে হাঁকাতে গিয়ে লংঅন বাউন্ডারিতে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ হন তিনি (২৭ বলে ৩৪)। ১৭তম ওভারে এসে জোড়া তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ওভারের প্রথম বলেই তাকে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে শান্তর হাতে ধরা পড়েন কনওয়ে। ৪০ বলে ৫ চার আর ৩ ছক্কায় ৬৪ রান করেন কিউই ওপেনার।
দুই বল পর সাইফউদ্দিন দারুণ এক ডেলিভারিতে স্টাম্প ভাঙেন নতুন ব্যাটার মার্ক চ্যাপম্যানের (২)। তবে এরপর গ্লেন ফিলিপস বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন। ১৯ বলেই ফিফটি পূরণ করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত তিনি ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে বোল্ড হন এবাদতের বলে। তবে ২৪ বলে ২ চার আর ৫ ছক্কায় ৬০ রানের তাণ্ডবে যা করার তা করে দিয়েই গেছেন। সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ৩৭ আর এবাদত ৪০ রানে নেন দুটি করে উইকেট।