নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও তিন অংকে পা দিতে পারলেন না মাহমুদুল হাসান জয়, অধিনায়ক মোমিনুল হক ও লিটন দাস। তবে তিন ব্যাটারের সেঞ্চুরি মিসের দিন লিড নিয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ৪০১ রান করেছে বাংলাদেশ। ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৭৩ রানে এগিয়ে টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রান করেছিলো নিউজিল্যান্ড।
সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ১৭৫ রান করেছিলো বাংলাদেশ। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ১৫৩ রানে পিছিয়েছিলো টাইগাররা। আগের দিন সাদমান ইসলাম ২২ ও নাজমুল হোসেন শান্ত ৬৪ রানে আউট হয়েছিলেন। মাহমুদুল হাসান জয় ৭০ ও মোমিনুল ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
তৃতীয় দিনের ১৮তম বলেই আউট হন জয়। গালিতে নিকোলসকে ক্যাচ দেয়ার আগে ২২৮ বলে ৭টি চারে ৭৮ রান করেন তিনি।
দলের স্কোর ২শ পার হবার পর প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মুশফিকুর রহিম। ট্রেন্ট বোল্টের মিডল-স্টাম্পের বল স্কয়ার লেগে ফ্লিক করতে গিয়ে বোল্ড হন মুশফিক। ৫৩ বলে ১২ রান করেন তিনি। দলীয় ২০৩ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে আউট হন মুশফিক।
দিনের শুরুতে ১৯ রানের ব্যবধানে জয় ও মুশফিককে হারানোয় চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় চাপ থেকে দলকে মুক্ত করেন মোমিনুল ও লিটন। পরিস্থিতিতে ভালোভাবেই সামালে উঠেন তারা। ফলে দ্বিতীয় সেশনে অবিচ্ছিন্ন থেকে যান মোমিনুল ও লিটন। ঐ সেশনেই হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তারা দু’জন।
১৪৭তম বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৫তম ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন মোমিনুল। চা-বিরতির আগের ওভারে ৯৩তম বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম ও নিউজিল্যান্ডের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান লিটন। তাই ৪ উইকেটে ৩০৭ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এ সময় মোমিনুল ৬১ ও লিটন ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন। এই সেশনে ২৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৮৭ রান তুলে লিড নেয়ার পথ তৈরি করেন মোমিনুল ও লিটন।
চা-বিরতির পর ৩১তম বলে লিড নেয় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম লিড নিলো টাইগাররা।
দলের লিড নিশ্চিত করার পরও নিজেদের ইনিংসগুলো স্বাচ্ছেন্দ্যে বড় করছিলেন মোমিনুল ও লিটন। দু’জনের ব্যাটিং দৃঢ়তায়, অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করার পথেই ছিলেন তারা। কিন্তু ২৪ বলের ব্যবধানে দু’জনইকে বিদায় দেন বোল্ট।
১৪১তম ওভারের শেষ বলে মোমিনুলকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন বোল্ট। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি মোমিনুল। ১২টি চারে ২৪৪ বলে ৮৮ রান করেন মোমিনুল। পঞ্চম উইকেটে লিটনের সাথে ৩১৭ বলে ১৫৮ রানের জুটি গড়েন মোমিনুল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যেকোন উইকেটে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ জুটি।
মোমিনুলকে শিকার করে দারুন এক ব্রেক-থ্রুর পর ১৪৫তম ওভারের পঞ্চম বলে লিটনের বিদায়ও নিশ্চিত করেন বোল্ট। অফ-স্টাম্পের বল খেলতে গিয়ে ভুল শটে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লিটন। ১৭৭ বলে ৮৬ রান করেন তিনি। তার ইনিংসে ১০টি চার ছিলো। ক্রিজে ছিলেন ২৪৭ মিনিট। মোমিনুল ছিলেন ৩৭০ মিনিট।
মোমিনুল-লিটনের বিদায়ের পর দিনের শেষ অংশ ভালোভাবে শেষ করেন ইয়াসির আলি ও মেহেদি হাসান মিরাজ। ৬৭ বল খেলে অবিচ্ছিন্ন ৩১ রান যোগ করেন তারা। ইয়াসির ১১ ও মিরাজ ২০ রানে অপরাজিত।
নিউজিল্যান্ডের বোল্ট ৬১ রানে ও ওয়াগনার ৯৮ রানে ৩টি করে উইকেট নেন।
স্কোর কার্ড : (টস-বাংলাদেশ)
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ৩২৮/১০, ১০৮.১ ওভার (কনওয়ে ১২২, নিকোলস ৭৫, শরিফুল ৩/৬৯)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস (আগের দিন ১৭৫/২, ৬৭ ওভার, জয় ৭০*, শান্ত ৬৪, মোমিনুল হক ৮*) :
সাদমান ইসলাম ক এন্ড ব ওয়াগনার ২২
মাহমুদুল হাসান জয় ক নিকোলস ব ওয়াগনার ৭৮
নাজমুল হোসেন শান্ত ক ইয়ং ব ওয়াগনার ৬৪
মোমিনুল হক এলবিডব্লু ব বোল্ট ৮৮
মুশফিকুর রহিম বোল্ড ব বোল্ট ১২
লিটন দাস ক ব্লানডেল ব বোল্ট ৮৬
ইয়াসির আলি অপরাজিত ১১
মেহেদি হাসান মিরাজ অপরাজিত ২০
অতিরিক্ত (লে বা-৭, নো-৩, ও-৫, পেনাল্টি-৫) ২০
মোট (৬ উইকেট ১৫৬ ওভার) ৪০১
উইকেট পতন : ১/৪৩ (সাদমান), ২/১৪৭ (শান্ত), ৩/১৮৪ (জয়), ৪/২০৩ (মুশফিকুর), ৫/৩৬১ (মোমিনুল), ৬/৩৭০ (লিটন)।
নিউজিল্যান্ড বোলিং :
সাউদি : ৩২-৪-৯৪-০ (ও-১),
বোল্ট : ৩০-১১-৬১-৩,
জেমিসন : ৩০-৯-৭২-০ (ও-১),
নিল ওয়াগনার : ৩৮-৯-৯৮-৩,
রবীন্দ্র : ২৬-৪-৬৪-০।