প্রথম দল হিসেবে এক ম্যাচ হাতে রেখে ইতেমধ্যেই কাতার বিশ^কাপের নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। যে কারনে তিউনিশিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ-ডি’র শেষ ম্যাচটি ফ্রান্সের জন্য শুধুই নিয়মরক্ষার ম্যাচে পরিনত হয়েছে। কিন্তু এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে তাল বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি এক পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে থাকা তিউনিশিয়ার জন্য বাঁচা মরার লড়াইয়ে পরিনত হয়েছে। সামান্য কিছু আশা বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে তাদের উড়তে থাকা ফ্রান্সকে মাটিতে নামতে হবে।
এবারের বিশ^কাপে এখনো কোন গোলের দেখা পায়নি আফ্রিকার দলটি। শনিবার দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের শঙ্কায় রয়েছে তিউনিশিয়া। এর আগে প্রথম ম্যাচে ডেনমার্ককে গোলশুন্য ভাবে রুখে দিয়ে এক পয়েন্ট অর্জন করেছিল তারা। মিশেল ডিউকের ২৩ মিনিটে হেডে সকারুজদের জয় নিশ্চিত হয়। আর এতেই প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত অস্ট্রেলিয়া দারুন জয়ে গ্রুপের দ্বিতীয় স্থান মজবুত করে।
জালেল কাদরির দল যদি ফ্রান্সকে হতবাক করে দিয়ে তিন পয়েন্ট অর্জনও করে তবুও নক আউট পর্ব নিশ্চিত হবে না। কারন পরের ম্যচে ডেনমার্কতে হারাতে পারলে অস্ট্রেলিয়ান পরের রাউন্ড নিশ্চিত হবে। তবে অস্ট্রেলিয়া ড্র করলে তিউনিশিয়ার জন্য দরজা খুলে যাবে।
কাতারে আসার আগে শক্তিশালী রক্ষনভাগ নিয়ে সাত ম্যাচে একটি গোলও হজম করেনি তিউনিশিয়া। বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যচে ১৮০ মিনিট মাত্র এক গোল হজম করেছে। কিন্তু মেক্সিকোর সাথে দ্বিতীয় দল হিসেবে প্রতিপক্ষের জালে এখনো কোন গোল দিতে পারেনি তিউনিশিয়া। এর আগে বিশ^কাপের কোন আসরে কোন গোল না দিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়নি ঈগলসের। অতীত পরিসংখ্যান থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে পারে আফ্রিকানরা।
যদিও ইতোমধ্যেই পরের রাউন্ড নিশ্চিত করা ফ্রান্সও যেহেতু নির্ভার হয়েই মাঠে নামবে তাই তারাও ছেড়ে কথা বলবে না। বিশ^কাপ শুরু আগে থেকে ইনজুরি ও প্রাক-টুনামেন্ট ফর্মহীনতা ফ্রান্সের শিরোপা ধরে রাখার মিশন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচেই ফরাসিরা তাদের আগমন জানান দিয় ফেলেছে। কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলে ডেনমার্কের বিপক্ষে দারুন এক জয় তুলে নিয়ে নক আউট পর্বে গেছে ফ্রান্স। গ্রুপ বিজয়ী হতে দিদিয়ের দেশ্যমের এখন শেষ ম্যাচে এক পয়েন্ট হলেই চলবে। এনিয়ে বিশ^কাপে টানা ছয় ম্যাচে জয় নিশ্চিত করেছে ফরাসিরা। কাল জিততে পারলে ইতালির সাথে সাত ম্যাচ জয়ের দ্বিতীয় সেরা রেকর্ড স্পর্শ করবে। ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল ব্রাজিল টানা ১১ ম্যাচে জয়ী হয়ে এখনো শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছে।
২০১০ সালের পর এই প্রথম তিউনিশিয়ার মোকাবেলা করতে যাচ্ছে ফ্রান্স। ঐ প্রীতি ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল।
ফ্রান্সের বিরুদ্ধে কাদরি পরিপূর্ণ ফিট দলই হাতে পাচ্ছেন। দলের দ্বিতীয় পছন্দের গোলরক্ষক বেশিল বেন সাইদ অস্বস্তি কাটিয়ে বদলী বেঞ্চে ফিরেছেন। রাইট-ব্যাক মোহামেদ ড্রাগার দ্বিতীয় ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর আগেই বদলী বেঞ্চে চলে গিয়েছিলেন। এ কারনে তার স্থানে ওয়াজডি কেচিরডা কিংবা ফেরানি সাসির মধ্যে যেকোন একজনের মূল দলে জায়গা হতে পারে। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ওয়াহবি খাজরির মূল দলে ফিরে আসা প্রায় নিশ্চিত।
ফ্রান্স শিবিরে একাধিক পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে। নক আউট পর্বের জন্য মূল দলের অনেককেই বিশ্রাম দেয়া হতে পারে। বড় ভাই লুকাস হার্নান্দেজ গুরুতর লিগামেন্ট ইনজুরিতে পড়ে বিশ^কাপ থেকে ছিটকে পড়ায় এই মূহূর্তে দলে একমাত্র স্বীকৃত লেফট-ব্যাক হিসেকে টিকে আছেন থিও হার্নান্দেজ। এসি মিলান ডিফেন্ডার এডুয়ার্ডো কামভিনগাকে এখনো মাঠে নামাননি দেশ্যম। এমবাপ্পে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি বিশ্রাম চাননা, তবে দেশ্যমের হাতে এমবাপ্পের জায়গায় উইলিয়াম সালিবা, মাত্তেও গুয়েনডুজি, কিংসলে কোম্যান ও ইউসুফ ফোফানা রয়ে গেছেন।