You are here
Home > খেলাধুলা > ডু-প্লেসিস ও ডেলপোর্টের ব্যাটিংয়ে হ্যাট্টিক জয় কুমিল্লার

ডু-প্লেসিস ও ডেলপোর্টের ব্যাটিংয়ে হ্যাট্টিক জয় কুমিল্লার

দুই দক্ষিণ আফ্রিকান ফাফ ডু-প্লেসিস ও ক্যামেরন ডেলপোর্টের দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুন্যে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অষ্টম আসরে হ্যাট্টিক জয়ের স্বাদ পেয়েছে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আজ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে কুমিল্লা ৫২ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে।
৩ খেলায় ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট কুমিল্লার। ৬ খেলায় সমান ৩টি করে জয়-হারে ৬ পয়েন্ট চট্টগ্রামের। রান রেটে এগিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে কুমিল্লা।
আসরের ১৩তম ম্যাচে প্রথম ব্যাট করে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮৩ রান করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ডু-প্লেসিস ৫৫ বলে অপরাজিত ৮৩ ও ডেলপোর্ট ২৩ বলে অপরাজিত ৫১ রান করেন। জবাবে ১৩১ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে চট্টগ্রাম। কুমিল্লার ইনিংস শুরু করেন লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় ওভারেই জয়কে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান চট্টগ্রামের স্পিনার নাসুম আহমেদ। কভারে সাব্বির রহমানকে ক্যাচ দেন জয়।
জয় ফেরার পর ডু-প্লেসিসকে নিয়ে কুমিল্লার রানের চাকা সচল রাখেন এবারের আসরে প্রথমবারের মত খেলতে নামা লিটন। লিটন-ডু প্লেসিসের মারমুখী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৫২ রান পায় কুমিল্লা। ১০ ওভার শেষে কুমিল্লার রান হয় ৮২। এই জুটি ভাঙ্গতে ছয় বোলার ব্যবহার করেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক নাইম ইসলাম। অবশেষে ১১তম ওভারে আবারো চট্টগ্রামকে উইকেট শিকারের আনন্দে ভাসান নাসুম। নিজের শেষ ওভার করতে এসে লিটনকে তুলে নেন নাসুম। ৩৪ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রান করেন লিটন। ডু-প্লেসিসের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৫ বলে ৮০ রান যোগ করেন লিটন।  
এ ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েলের বলে বোল্ড হয়ে ১ রানে ফিরেন ইমরুল।
১২তম ওভারের পঞ্চম বলে ইমরুলের বিদায়ে ক্রিজে ডু-প্লেসিসের সঙ্গী হন ডেলপোর্ট। ১৫তম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৪৫তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলেন ডু-প্লেসিস। এজন্য ৪০ বল খেলেছেন তিনি।
১৬ ওভারের পর থেকে দ্রুত রান তুলেন ডু-প্লেসিস ও ডেলপোর্ট। ১৬ থেকে ১৯তম ওভার পর্যন্ত ৫৩ রান নেন তারা। শরিফুলের করা শেষ ওভারের প্রথম পাঁচ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কা হাকান ডেলপোর্ট। এতে ২২ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৩১তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান ডেলপোর্ট। ইনিংসের শেষ বলে ১ রান নিতে পারেন তিনি। ফলে ৩ উইকেটে ১৮৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় কুমিল্লা।
ডু-প্লেসিসের ইনিংসে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান ডেলপোর্ট। চট্টগ্রামের নাসুম ২৩ রানে ২ উইকেট নেন। আগের ম্যাচে বিপিএলের অভিষেকেই হ্যাট্টিক করা চট্টগ্রামের পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি আজ উইকেটশুন্য ছিলেন। ৪ ওভারে ৩৪ রান দেন তিনি।  
আগের ম্যাচেই ২০২ রান করা চট্টগ্রামের জন্য আজকের ১৮৪ রানের টার্গেট সহজই হবার কথা। কিন্তু আত্মবিশ^াস নিয়ে জবাব দিতে নেমে বিপদেই পড়ে চট্টগ্রাম। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেনার লুইসকে ও নবম বলে আফিফ হোসেনকে হারায় চট্টগ্রাম। লুইস ৪ রান করে কুমিল্লার স্পিনার নাহিদুল ইসলামের এবং আফিফ ৪ রান করে বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হন।
শুরুর ধাক্কাটা সামলে উঠার চেষ্টা করেও সফল হয়নি চট্টগ্রামের পরের দিকের ব্যাটাররা। কুমিল্লার বোলাররা চেপে ধরে চট্টগ্রামের মিডল-অর্ডার ব্যাটারদের। এতে ৭২ রানে ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে। সাব্বির রহমান ৫ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ১০ রান করে নাহিদুলের শিকার হন। চট্টগ্রামের অধিনায়ক নাহিদুলকে ৮ রানে ফেরান শহিদুল। আর হাওয়েলকে বিদায় করে  কুমিল্লার জয়ের পথ প্রশস্থ করে ফেলেন বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। তানভীরের বলে বোল্ড হবার আগে ২ রান করেন তিনি।
সতীর্থদের যাওয়া আসার মাঝেও অন্যপ্রান্ত আগলে রেখে ইনিংস বড় করেছেন ইংল্যান্ডের ওপেনার উইল জ্যাকস। ১৫তম ওভারে শহিদুলকে পরপর তিনটি চার মেরে হাফ-সেঞ্চুরিও পূর্ণ করেন জ্যাকস। কুমিল্লার জয়ের পথে কাটা হিসেবেই ক্রিজে ছিলেন তিনি। তবে ১৬তম ওভারে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে জ্যাকসকে ফিরিয়ে দিয়ে  কুমিল্লার জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন তানভীর। ৪২ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৯ রান করেন জ্যাকস। তার ইনিংসটি চট্টগ্রামের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৩ ওভারে ১৩১ রানে গুটিয়ে যায়।
কুমিল্লার নাহিদুল ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া ২টি করে নেন মুস্তাফিজুর-তানভীর-শহিদুল। ম্যাচ সেরা হন কুমিল্লার ডু-প্লেসিস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৮৩/৩, ২০ ওভার (ডু-প্লেসিস ৮৩*, ডেলপোর্ট ৫১*, নাসুম ২/২৩)।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ১৩১/১০, ১৭.৩ ওভার (জ্যাকস ৬৯, মৃত্যুঞ্জয় ১৩, নাহিদুল ৩/১৭)।
ফল : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৫২ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : ফাফ ডু-প্লেসিস (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)।

Similar Articles

Leave a Reply

Top