মাত্র দুই দিন আগে এই এশিয়া কাপেই দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল। তাতে ম্যাচ জিতে নেয় শ্রীলঙ্কা। পাঁচ উইকেটের সেই হারের রেশ তো নিশ্চয়ই এখনো তাজাই থাকার কথা পাকিস্তান দলে। আজ ফাইনাল ম্যাচে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তারা কি প্রতিশোধ নিতে পারবে, নাকি টানা জয় তুলে নিয়ে এশিয়া-সেরার মুকুট আবার মাথায় তুলবে শ্রীলঙ্কা?
সেই মীমাংসা হয়ে যাবে আজ রাতে। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নামছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। যে দলই জিতুক, দীর্ঘদিন পর এশিয়া-সেরার মুকুট পুনরুদ্ধারের গৌরবসিক্ত হবে তারা।
শ্রীলঙ্কা ফাইনাল খেলবে, তা কে ভেবেছিল? উদ্বোধনী ম্যাচে যেভাবে আফগানিস্তানের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিল, তাতে তাদেরকে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয়ার কাতারে রেখেছিল সবাই। মাত্র ১০৫ রানে অলআউট হয়েছিল লঙ্কানরা। জবাবে ১০.১ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আফগানরা।
সেই শ্রীলঙ্কা গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের করা ১৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের বোলার এবং ফিল্ডারদের বদান্যতায় জয় পেয়েছিল লঙ্কানরা। না হয়, ফাইনালে আগামীকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে থাকতো অন্য কোনো দল।
সুপার ফোরে এসেই বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে লঙ্কানরা। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে নিলো প্রতিশোধ। আফগানদের করা ১৭৫ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা। এরপর হারিয়ে দিয়েছে ভারতকেও। আফগানিস্তানকে পাকিস্তানের হারানোর মধ্য দিয়ে ভারত এবং আফগানদের বিদায় হয়, ফাইনাল নিশ্চিত হয় পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার।
সুপার ফোরের শেষ ম্যাচের গুরুত্ব কম থাকলেও এই ম্যাচে জয়ের মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে ফাইনাল শেষে শেষ হাসি হাসারও যোগ্য দাবিদার করে তুলেছে দাসুন শানাকার দল। দলটি যেভাবে শেষ চার ম্যাচ খেলেছে, তাতে ফাইনালে তাদেরকে ফেবারিট ধরেই নেয়া যায়।
অন্যদিকে পাকিস্তানও শুরু করেছিল হার দিয়ে। ভারতের কাছে হেরেছিল ৫ উইকেটের ব্যবধানে। এরপর হংকংকে হারিয়ে সুপার ফোরে ওঠে তারা। এখানে আবারও ভারতের মুখোমুখি এবং এবার তারা উল্টো হারায় ভারতকে। এখানেও পাকিস্তান জয়লাভ করে ৫ উইকেটে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে শ্বাসরূদ্ধকর ম্যাচে শেষ মুহূর্তে নাসিম শাহর টানা দুই ছক্কায় ১ উইকেটে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। শেষ ম্যাচে যদিও হেরেছে বাবর আজমের দল। কিন্তু এই দলটি যে কোনো সময় ঘুরে দাঁড়াতে পারে। সুতরাং, ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে এগিয়ে রাখার কোনোই সুযোগ নেই।
সে অর্থে নিরঙ্কুশ ফেবারিট নয় কেউই। যদিও, ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই নির্ধারণ হবে টসের সময়। কারণ, দুবাইতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া এবং রান তাড়া করে জয় পাওয়াটা অনেক সহজ। সুতরাং, সই হয়তো বলে দেবে, কে হবে চ্যাম্পিয়ন। সুতরাং, ফাইনালে বলা চলে- পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা দু’দলেরই প্রতিপক্ষ টস নামক ভাগ্যের খেলা।
এদিকে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচে এখন পর্যন্ত মোট তিনবার দেখা হয়েছে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার। এতে সফলতার হারের পাল্লা ভারী শ্রীলঙ্কার। ফাইনালে পরস্পরের মোকাবিলায় দুবার জিতেছে লঙ্কানরা। অন্যদিকে একবার জিততে পেরেছে পাকিস্তান।
এশিয়া কাপে পিছিয়ে থাকলেও শক্তিমত্তার বিচারে এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি প্রকাশিত টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে লঙ্কানদের চেয়ে ঢের এগিয়ে বাবর আজমরা। ২৬২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে র্যা ঙ্কিংয়ে দুই নম্বরে রয়েছে পাকিস্তান, আর ২৩৪ রেটিং নিয়ে আটে দাসুন শানাকা বাহিনী। ফাইনালের লড়াইয়ে দারুণ এক মাচ উপভোগ করতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্ব, এমনটা বলা যেতেই পারে।