ওয়ানডে সিরিজ হারলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মত দ্বিপাক্ষীক টি-টোয়েন্টি সিরিজ স্মরনীয় করে রাখতে চায় স্বাগতিক বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করছে বাংলাদেশ।
২০০৬ সালে শুরুর পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ইতোমধ্যে ১৪৪টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে মাত্র একবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে টাইগাররা। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ম্যাচটি ৮ উইকেটে হেরেছিল টাইগাররা।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতে এবারের সফর শুরু করেছে বাংলাাদেশ। ২০১৬ সালের পর ওয়ানডে ফরম্যাটে ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে প্রথম সিরিজ হারের স্বাদ দেয় ইংলিশরা। সাত বছর আগে নিজ মাঠে এই ইংল্যান্ডের কাছেই সর্বশেষ সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ দল।
টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে ওয়ানডের ক্ষত কমানোর সুযোগ থাকছে বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য এখন থেকেই শক্তিশালী দল তৈরি করাই মূল লক্ষ্য তাদের।
আজ চট্টগ্রামে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি দলকে শুধু আজকেই দেখেছি। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পথে এগিয়ে চলার যাত্রা শুরু হলো মাত্র। এর মাঝে অনেক কিছুই হবে। এখন পর্যবেক্ষণ করছি আমাদের কী আছে, কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে এবং নিজেদের শক্তিমত্তা অনুযায়ী কোন পরিকল্পনায় আমরা খেলতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি না এটা কঠিন কিছু। এটা আমাদের বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সুযোগ। এটি কোথায় হবে সেখানকার কন্ডিশন সম্পর্কে আমাদের ভাবতে হবে। এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে হবে। আমাদের কাছে আরও অনেক তথ্য আছে। অন্যান্য দলের চেয়ে আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর কিছুটা বেশি করেছি। তাই মানসিকভাবে প্রস্তুতি ও সঠিক সমন্সেয়ের চেষ্টা করতে হবে। অনেক খেলোয়াড়ের জন্য সুযোগ রয়েছে।’
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। এজন্য ইংলিশদের প্রক্রিয়াকে অনুসরণ করতে চান হাথুরুসিংহে। বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য শক্তিশালী দল গঠন লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তারা। ওয়ানডেতে ফরম্যাটে তাদের একটি ভারসাম্যপূর্ণ দল রয়েছে। টি-টোয়েন্টি দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে তারা। আমি মনে করি না ২০২২ বিশ্বকাপ জয়ী দল ২০২৪ বিশ্বকাপে খেলবে। এজন্য নতুন খেলোয়াড়দের নিয়ে চেষ্টা করছে তারা। পরিকল্পনা নিয়েই দল গড়ছে তারা। আমরা সেদিকেই নজর রাখতে পারি।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেন হাথুরুসিংহে। ওয়ানডে সিরিজে হারলেও দলের পারফরমেন্সে খুশি তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটি ভালো শুরু ছিলো। কিছু জায়গায় আমি মুগ্ধ ছিলাম। সহায়ক কন্ডিশন না থাকারও পর পেসাররা ভালো করেছে। তাদের খেলার মধ্যে শৃঙ্খলা ও বোঝাপড়া ভালো ছিলো। বিশেষভাবে তাসকিন-এবাদত ভালো করেছে। দলের ফিল্ডিং প্রচেষ্টায় খুশি আমি। আমি মনে করি, ইংল্যান্ডকে আমরা চাপে রাখতে পেরেছি। ব্যাটিংয়ে কিছু বিষয় আমার চোখে পড়েছে, যেখানে আমরা ভালো করতে পারি।’
মিরপুরে নিজেদের দুর্গে সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডে হারলেও, চট্টগ্রামের মাটিতে শেষ ম্যাচ জিতে ইংল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারে বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টি একই উইকেট ব্যবহার করা হবে। এতে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই জয়ের আশা জাগাচ্ছে টাইগারদের।
১৪৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ৪৯টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। হেরেছে ৯২টিতে। বাকী তিন ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের অভিষেক হতে পারে। ২০১৫ সালে একমাত্র টি-টোয়েন্টি খেলা রনি তালুকদার দলে ফিরতে পারেন।
বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, নাসুম আহমেদ, নুরুল হাসান সোহান, শামীম হোসেন, রনি তালুকদার, তৌহিদ হৃদয়, রেজাউর রহমান রাজা ও তানভীর ইসলাম।
ইংল্যান্ড দল : জস বাটলার (অধিনায়ক), ফিল সল্ট, জোফরা আর্চার, মার্ক উড, মঈন আলী, ডেভিড মালান, স্যাম কারান, বেন ডাকেট, ক্রিস জর্ডান, আদিল রশিদ, রেহান আহমেদ, রিচ টপলি ও ক্রিস ওকস।